থানকুনি পাতা মুখে দিলে কি হয়। কোন পাতা খেলে ত্বক ফর্সা হয়?। ত্বকের যত্ন ২০২৫

থানকুনি পাতা একটি ভেষজ উদ্ভিদ। থানকুনি পাতা খেলে ত্বক ফর্সা হয় কারণ থানকুনি পাতায় প্রচুর পরিমানে অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট থাকে যা ত্বকের ক্লান্তিভাব দূর করে ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। ত্বক ফর্সা করার জন্য ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ সিরাম নিয়মিত ব্যবহারে ত্বককে ফর্সা উজ্জ্বল করে তোলে।

থানকুনি পাতা মুখে দিলে কি হয়? কোন পাতা খেলে ত্বক ফর্সা হয়?

আমাদের অনেকের মনে প্রশ্ন থানকুনি পাতা মুখে দিলে কি হয়? থানকুনি পাতার রস খেলে কি হয়? শিরোনাম দেখেই বুঝতে পারছেন আজকে থানকুনি পাতার ত্বকে ব্যবহারে উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হবে। ইতোমধ্যে আমারা যৌবন ধরে রাখতে থানকুনি পাতা এর ব্যবহার ও বাচ্চাদের থানকুনি পাতার খাওয়া নিয়ম ও উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।

থানকুনি পাতা একটি ভেষজ ঔষধ হিসেবে কাজ করে। থানকুনি পাতা মুখে দিলে ত্বক ফর্সা হয়, ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে পারে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে কার্যকরী এই পাতাটি ছোট বড় সকলের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এই পাতাটি নিয়মিত খেলে পেটের পীড়া, গ্যাসটিকের মত সমস্যার দ্রুত সমাধান পাওয়া যায়।

থানকুনি পাতায় ভিটামিন সি থাকায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার সাথে সাথে শরীরের  অবসাদ ও ক্লান্তি ভাব দূর করে শরীর সুস্থ রাখে। আজকে আমরা যে সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো চলুন একনজরে দেখে নেই -
  • থানকুনি পাতা মুখে দিলে কি হয়?
  • কোন পাতা খেলে ত্বক ফর্সা হয়?
  • থানকুনি পাতা খেলে কি ঘুম হয়?
  • থানকুনি পাতা খেলে কি স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়?
  • থানকুনি পাতার রস কিভাবে খায়?
  • থানকুনি পাতার কি কি উপকারিতা রয়েছে?
  • গর্ভাবস্থায় থানকুনি পাতা খাওয়ার উপকারিতা

থানকুনি পাতা মুখে দিলে কি হয়?

থানকুনি পাতায় ভেষজ উপদান থাকায় ত্বকের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী। থানকুনি পাতার রস মুখে দিলে ত্বক ফর্সা হয় কারণ এতে ভিটামিন সি, অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদন প্রচুর পরিমাণে থাকায় ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়, ত্বকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি জুগিয়ে ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।

থানকুনি পাতায় থাকা অ্যামাইনা এসিড, বিটা ক্যারোটিন ত্বক কোমল রাখতে সাাহয্য করে। যার ফলে ত্বক থেকে বয়সের ছাপ অনেকাংশে চলে যায়। নিয়মিত থানকুনি পাতার রস মুখে মাখলে ৭০ বছরেও আপনি থাকবেন ইয়াং। থানকুনি পাতার রস নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং কোলাজেনের উৎপাদন বাড়ায়।

ব্রণ, মেছতার সমস্যা থাকলে ত্বকে আপনি থানকুনি পাতার রস মাখতে পারেন। থানকুনি পাতার অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদন ব্রণের দাগ দূর করতে বেশ কার্যকরী। থানকুনির ম্যাডেকাসসাইড ত্বকের জ্বালাপোড়া দূর করে, ত্বকের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রেখে ত্বককে ভেতর থেকে ঠান্ডা ও প্রশান্ত রাখে ফলে ত্বকে সতেজভাব ফুটে ওঠে।

কোন পাতা খেলে ত্বক ফর্সা হয়?

থানকুনি পাতা খেলে কি সত্যিই ত্বকের রং ফর্সা হয়? - এরকম একটি প্রশ্ন আমাদের সবার মাঝেই দেখা যায়। বিশেষ করে মেয়েদের মাঝে এই প্রশ্ন অনেক বেশি শোনা যায়। ত্বক নিয়ে সবারই সচেতন হওয়া জরুরি। সার্বিক সুস্থতা ত্বকের সুস্থার উপর নির্ভর করে।

ত্বকের উজ্জ্বলতা বা গ্লো ধরে রাখতে ত্বকের যত্ন গুরুত্বপূর্ণ। ত্বকের যত্নে আমরা বিভিন্ন উপাদান ব্যবহার করে থাকি সেটা প্রাকৃতিক বা কৃত্রিম। আজকে আমরা প্রাকৃতিক উপদান নিয়ে আলোচনা করবো। থানকুনি পাতার ব্যবহার আমাদের ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

থানকুনি পাতার গুড়া বা রস আমাদের ত্বকের ব্যবহার করলে ত্বক ফর্সা হয়। এবং নিয়মিত থানকুনি পাতার রস খেলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বা ত্বক ফর্সা হয়। থানকুনি পাতায় প্রচুর ভিটামিন সি সিরাম থাকায় তা ত্বকের গভীর পষ্টি উপাদান জোগাতে সাহায্য করে যা বাহির থেকে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে। 

নিয়মিত থানকুনি পাতার রস ব্যবহারে ত্বক টানটান করে তোলে এবং অকাল বার্ধক্য প্রতিরোধ করে। তবে আমাদের অবশ্যই পরিমিত ও নিয়ম মাফিক থানকুনি পাতার রস ব্যবহার করতে হবে। কৃত্রিম উপায়ে ত্বক ফর্সা করা কখনই ‍উচিত নয়।

থানকুনি পাতা খেলে কি ঘুম হয়?

ঘুমের সমস্য দূর করে থানকুনি পাতা এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে। জীবনে চলার পথে আমাদের দুশ্চিন্তা, উৎকন্ঠার মত নানা সমস্য আমাদের সামানে চলে আসে। সকল সমস্য কাটিয়ে স্বাভাবিক নিয়মে জীবন পরিচালনায় দুশ্চিন্তা, উৎকন্ঠা মুক্ত থাকতে হবে অন্যথায় ডায়াবেটিস, প্রেশারসহ একাধিক জটিল অসুখের ফাঁদে পড়ার আশঙ্কা বাড়ে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে থানকুনি পাতা খেলে কি ঘুম হয় ? উত্তর হ্যা, থানকুনি পাতার সহায়ক হিসেবে কাজ করে। গবেষণায় দেখা গেছে, থানকুনি পাতায় অ্যান্টিঅ্যাংজাইটি এফেক্ট রয়েছে। যা মস্তিষ্কের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস, নিউরোনইফ্লামেশনের মতো সমস্যাকে অনায়াসে নিয়ন্ত্রন করতে পারে। 

ঘুমের মধ্যে আমাদের অজান্তেই শরীর একাধিক কাজ সেরে ফেলে। তাই দিনে অন্তত ৭ ঘণ্টা ঘুম জরুরি। তাই ভালো ঘুম, স্ট্রেস এবং অ্যাংজাইটির ফাঁদ কাটাতে নিয়মিত থানকুনি সেবন করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

চলুন গানের একটি কলি শুনে আসি “আজকে আমার মন ভালো নেই” সত্যিই  কি আপনার মন খারাপ? একাকিত্ব, কাজে অনীহা, অনিদ্র অনুভব করছেন? তাহলে জেনে রাখুন থানকুনি পাতার অসাধারণ গুণের কথা। থানকুনি পাতায় অ্যান্টিডিপ্রেশেন্ট এফেক্ট থাকায় আপনার শরিরে এনার্জি জোগাতে সাহায্য কারবে যা খুব সহজেই আপনার মনের গভীরের এককীত্ব দূর করতে সাহায্য করবে।

থানকুনি পাতা খেলে কি স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়?

জীবনে স্বাভাবিক নিয়ম বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমাদের স্মৃতিশক্তি দুর্বল হতে শুরু করে। ইয়াং বয়সের মত ধারালো মস্তিস্কে ফাংশন কাজ করে না। তবে কোন কারণ ছাড়াই স্মৃতিশক্তি কমে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ এমন সমস্যার পেছনে কলকাঠি নাড়তে পারে অ্যালঝাইমার্স ডিজিজ। অ্যালঝাইমার্স ডিজিজ থেকে মুক্তি পেতে থানকুনি পাতা আপনাকে সাহায্য করতে পারে।

নিয়মিত থানকুনি পাতা সেবন করলে মস্তিষ্কের নার্ভের ফাংশন এবং মেমোরি ফাংশনের কর্মক্ষমতা বাড়ে। সেই সুবাদে অ্যালঝাইমার্সের মতো জটিল অসুখের ফাঁদ এড়িয়ে চলা সম্ভব হয়। তাই স্মৃতি শক্তির ১০০% কার্যকর রাখতে নিয়মিত থানকুনি পাতা খাওয়াই উত্তম সমাধান।

থানকুনি পাতার রস কিভাবে খায়?

বিভিন্ন উপায়ে থানকুনি পাতা খেতে পারেন। যেভাবেই খান উপকার পাবেন। প্রতিদিন সকালে উঠে কয়েকটি থানকুনি পাতা চিবিয়ে পানি দিয়ে খেতে পারেন, পাতার রস মধুর সাথে মিশিয়ে সেবন করতে পারেন। আবার পাতা কুচিকুচি করে ভর্তা করে ভাতের সঙ্গেও মিশিয়ে খেলে উপকার পাবেন।

থানকুনি পাতার কি কি উপকারিতা রয়েছে?

ঔষধি গুণ থাকায় থানকুনি পাতার বহুবিধ উপকার রয়েছে। উল্লেখযোগ্য কিছু উপকার যেমন যৌবন শক্তি ফিরে পেতে থানকুনি পাতার রহস্যময় গুন। থানকুনি পাতর উপকারিতা । বাচ্চাদের থানকুনি পাতা খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা। এছাড়াও আরো উপকারিতা রয়েছে তা হলো -
  • পেটের অসুখ - ডায়রিয়া, কলেরা, আমাশয় ইত্যাদি তে ঔষধ হিসেবে কাজ করে
  • কাশি কমাতে সহায়তা করে
  • মুখের ঘা ও শরিরের ক্ষত সারাতে
  • ব্রণ বা মেছতা চিকিৎসায় থানকুনি
  • ত্বকের উজ্জ্বলতা ফেরাতে
  • যৌবন ধরে রাখতে
  • চুল পড়া রোধ করতে
  • গলা ব্যাথা কমাতে
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে

গর্ভাবস্থায় থানকুনি পাতা খাওয়ার উপকারিতা কি?

গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে থানকুনি পাতার জুড়ি মেলা ভার। ভিটামিন সি সমৃদ্ধি এই প্রাকৃতিক এন্টিক্সিডেন্ট থাকে যা গর্ভবতী মায়ের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে থাকে।

এন্টি ইনফ্লামিটি বৈশিষ্ট সম্পন্ন হওয়ার ব্যথা উপশমে থানকুনি পাতা কার্যকর। গর্ভবতী মায়েদের পিঠে, কোমরে ব্যথা দেখা দেয় এসময় ডাক্তারের পরামর্শে থানকুনি পাতার রস খাওয়া যেতে পারে। থানকুনি পাতার যেমন উাপার রয়েছে তেমনি ওভার ডোজ হলে হিতে বিপরীত হতে পারে।

গর্ভাবস্থায় থানকুনি পাতা খেলে অবশ্যই অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শে খেতে হবে। বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাস ও শেষ তিন মাস থানকুনি পাতা না খাওয়ায় ভালো তবে ডাক্তারের পরামর্শে খাওয়া যেতে পারে।

লেখকের মতামত। থানকুনি পাতা খেলে কি ফর্সা হয়?

প্রিয় পাঠক, আজকে থানকুনি পাতা মুখে দিলে কি হয় বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করছি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারলাম এবং আপনারা আপনাদের সকল প্রশ্নের উত্তর জানতে পারলেন।

থানকুনি পাতা মুখে দিলে কি হয়? কোন পাতা খেলে ত্বক ফর্সা হয়? এই টপিকে যেসকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে সকল কিছুই বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আলোচনা করা হয়েছে। সচেতনার জন্য জেনে রাখা ভালো থানকুনি পাতা ব্যবহারের চিকিৎসক/বিশেষজ্ঞ  পরামর্শ গ্রহণ করুন।

আর্টিকেলটি আপনার উপকারের সাথে সাথে আপনার বন্ধু/ আত্মীয় স্বজনের উপকারে আসতে এখনই শেয়ার করুন। থানকুনি পাতা ব্যবহারে আপনি কেমন  উপকার পেয়েছেন  এখনই কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ
Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url